বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি: ফরিদপুর বোয়ালমারী উপজেলায় সরিষার ক্ষেত থেকে মধু সংগ্রহ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মধু ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা জানান, এতে আর্থিকভাবে তারা লাভবান হচ্ছেন, বেকারত্বও দূর হচ্ছে। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, একদিকে ব্যবসায়ীরা মধু বিক্রি করে যেমন আয় করছেন, অন্যদিকে ক্ষেতে মধু চাষ করায় সরিষার ফলনও বাড়ছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, তারা সরিষা ক্ষেতের পাশে খোলা জায়গায় চাক ভরা বাক্স ফেলে রাখেন। একেকটি বাক্সে মোম দিয়ে তৈরি ছয় থেকে সাতটি মৌচাকের ফ্রেম রাখা হয়। বাক্সের ভেতর রাখা হয় একটি রানি মৌমাছি। রানি থাকায় অন্য মৌমাছিরা আসতে থাকে ওই বাক্সে। প্রতিদিন সকাল ৮ টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করেন। এতে একদিকে যেমন আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন, অন্যদিকে তাদের দূর হচ্ছে বেকারত্ব। এসব মধু স্থানীয় ভাবে ও দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করছেন তারা।
বোয়ালমারী উপজেলার সাতৈর রেললাইন সড়কের পাশে সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করতে এসেছেন সাতক্ষিরা জেলা থেকে শের শাহ ইসলাম।
তিনি সরিষা ফুল থেকে মধু আহরণের পদ্ধতি সম্পর্কে বলেন, মধু সংগ্রহের জন্য স্টিল ও কাঠ দিয়ে বিশেষভাবে বাক্স তৈরি করা হয়। বাক্সে উপরের অংশটা কালো রঙের পলিথিন ও চট দিয়ে মোড়ানো থাকে। ভেতরে কাঠের তৈরি ৭টি ফ্রেমের সঙ্গে মোম দিয়ে বানানো বিশেষ কায়দায় এক ধরনের সিট লাগানো থাকে। বাক্সগুলো সরিষা ক্ষেতের পাশে সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়। ভেতরে দেওয়া হয় রানি মৌঁমাছি। যাকে ঘিরে আনাগোনা করে হাজারো পুরুষ মৌমাছির দল। রানি মৌমাছির আকর্ষণে সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে পুরুষ মৌমাছিরা। একটি রানি মৌঁমাছির বিপরীতে প্রায় ১ থেকে দেড় হাজারের মতো পুরুষ মৌঁমাছি থাকে একেকটি বাক্সে।
শের শাহ বলেন, আমরা ৮ মাস সরিষা,লিচু,সুন্দরবনের বিভিন্ন ফুল থেকে থেকে মধু সংগ্রহ করে থাকি। বাকি চার মাস কৃত্রিম পদ্ধতিতে চিনি খাইয়ে মৌমাছিদের পুষিয়ে রাখতে হয়। ডিসেম্বর মাস থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সরিষা ক্ষেত থেকে মধু সংগ্রহ করার উপযুক্ত সময়।
তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ কেজি মধু পাওয়া যায়। আমি এই মাঠে১৬০টি বাক্স ফেলে রেখেছি। প্রতি কেজি মধু বিক্রি করছি ৪০০ টাকা দরে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।